আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা রচনাটির ধারণা ও বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা : পড়ে কি বুঝলাম?
- প্রশ্ন: বৈজ্ঞানিক গল্প কাহিনী বলতে কী বোঝো?
- উত্তর: বৈজ্ঞানিক গল্প কাহিনী বলতে বোঝায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন ধারণা কে কেন্দ্র করে লেখা কাল্পনিক কাহিনী সমূহকে।
- প্রশ্ন: আগে আর কোন ধরনের কল্পকাহিনী তুমি পড়েছ?
- উত্তর: এর আগে আমি জিন-পরি ও রাক্ষস-খোক্ষসের রূপকথা, দৈত্য দানবের কাহিনী, রাজপুত্র রাজকন্যার গল্প কাহিনী ইত্যাদি জাতীয় কল্পকাহিনী পড়েছি।
- প্রশ্ন: আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা গল্পের কোন কোন ঘটনা কাল্পনিক?
- উত্তর: আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা গল্পটিতে রঞ্জুর বলা বিভিন্ন ঘটনা যেমন ভাল্লুক ও ময়ূরের ঘটনা, মহাকাশের আগন্তুকের ঘটনা, ফ্লায়িং সসার থেকে বিদঘুটে প্রাণীর লেজারগান দিয়ে গুলি করার ঘটনা, রোবটের ঘটনা এছাড়া ছাদে আসা ফ্লাইং সসার ও কাঠির মত মানুষদের ঘটনাগুলো কাল্পনিক ঘটনা।
- প্রশ্ন: এই গল্পের কোন কোন ঘটনা বাস্তব?
- উত্তর: এই গল্পে রঞ্জুর বাবা-মা ও বোন শিউলির সঙ্গে যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা বাস্তব ঘটনা। যেমন রঞ্জুর বাবা-মার সঙ্গে ঘুমানো, শিউলির সঙ্গে এক ঘরে ঘুমাতে দেওয়া, এছাড়া পরিবারের বিভিন্ন কথাবার্তা, আলাপ-আলোচনা ইত্যাদি।
- প্রশ্ন: রূপকথার সঙ্গে বৈজ্ঞানিক গল্প কাহিনীর মিল অমিল কোথায়?
- উত্তর: রূপকথার গল্প কাহিনীর সাথে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর প্রধান মিল হল উভয় কল্পকাহিনী কল্পিত। রূপকথার কল্পকাহিনীতে আমরা দেখতে পাই রাজকন্যা রাজপুত্রর কাহিনী, রাক্ষস খোক্ষসের কাহিনী, এছাড়া লুকো মুখে প্রচলিত নানা ধরনের কল্পকাহিনী। অপরপক্ষে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে আমরা বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন কাল্পনিক কাহিনী দেখতে পাই। যেমন মহাকাশ ভ্রমণ, মহাকাশে সময় ভ্রমণ, মহাবিশ্বের জীবন, ফ্লায়িং সসার।
আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলার মূলভাব
আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা গল্পটির প্রধান চরিত্র রঞ্জু। রঞ্জু ছোটবেলা থেকেই বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলতো। তার কল্পনা শক্তি ছিল অত্যন্ত প্রখর। বাবা মা ভেবেছিলেন রঞ্জু বড় হলে বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলার প্রবণতা কমে যাবে। কিন্তু কিছুটা বড় হওয়ার পরেই সে সাইন্স ফিকশন বই পড়া শুরু করে। সাইন্স ফিকশন বই পড়ার ফলে তার বানিয়ে গল্প বলার প্রবণতা আরো বেড়ে যায়। রঞ্জুর সকল বানানো গল্পের প্রধান শ্রোতা হল রঞ্জুর বড় বোন শিউলি। একদিন স্কুল থেকে ফিরে রঞ্জু শিউলিকে বলে সে নাকি একটি রোবটের দেখা পেয়েছে। সেই রোবট তার কাছে ব্যাটারি খেতে চেয়েছে এবং সে ব্যাটারি কিনে দিয়েছে। উপকারের বিনিময়ে রোবট তাকে কয়েকটি তেতুলের বিচি উপহার দেয়। রোবট বলে এই বিচিগুলো থেকে গাছ হয় এবং এগুলো ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শিউলি রঞ্জুর এ সকল বানানো গল্প মনোযোগ সহকারে শোনে কিন্তু বিশ্বাস করে না। দোয়াতের পাত্র ভেঙে ফেলাতে একদিন রঞ্জুর মা রঞ্জুকে প্রচন্ড বকাবকি করে। বকা খেয়ে মন খারাপ করে রঞ্জু ছাদে গিয়ে বসে। ছাদে সে একটি মহাকাশযানের দেখা পায়। মানুষের মতো দেখতে একটি প্রাণী বেরিয়ে আসে। সেই প্রাণীটি পৃথিবীর সকল ভাষায় কথা বলতে পারে। সে বাংলা ভাষায়ও কথা বলতে পারে আবার আঞ্চলিক চাটগাইয়া ভাষাও কথা বলতে পারে। ভিনগ্রহের সেই প্রাণীর অনুরোধে রঞ্জু তার পকেটে থাকা চুইংগাম দিয়ে মহাকাশযানের ফুয়েল ট্যাংকের লিকেজ ঠিক করে দেয়। সেই অদ্ভুত প্রাণীটি ফিরে যাওয়ার সময় রঞ্জুকে একটি আমড়া উপহার দিয়ে যায়। আমড়ার আটি দেখতে ক্র্যাব নেবুলার মতই। রঞ্জু বাড়ির ছাদ থেকে ঘরে ফিরে আসলে শিউলি আমড়া কোথায় পেল জানতে চায়। এবার রঞ্জু পুরো কাহিনী খুলে বলার উৎসাহ পেল না। শিউলির প্রশ্নের উত্তরে নিরঞ্জু বলে দিল “সবাই যেখানে পায় সেখানে পেয়েছি।”