অনেক পুষ্টিবিদদের মতে ওজন কমানো আসলে কঠিন কোন কাজ নয়। একটু ইচ্ছেশক্তি ও সামান্য ধৈর্য থাকলে ওজন কমানো সম্ভব। আর বেশিরভাগ সময়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওজন কমানো সম্ভব। যেমন ধরুন খাবারের পূর্বে এক গ্লাস পানি পান করে নিন। এতে আপনার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। যার ফলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।
তাহলে আসুন ওজন কমানোর সহজ কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করি।
১. গ্রিন টি পান করাঃ
একটি গবেষণায় দেখা গেছে গ্রিন টি ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। গ্রীন টি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীরে মেটাবলিজম আরও উন্নত ও শক্তিশালী করে। ফলে আপনার শরীর আগের থেকে বেশি পরিমাণ ক্যালোরি দহন করতে সক্ষম হয়। গবেষণাটিতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি যে প্রতিদিন চার কাপ গ্রিন টি পান করে সে প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত 400 ক্যালোরি পর্যন্ত দহন করতে সক্ষম হয়। তাই আমাদের উচিত গ্রিন টি পান করা।
২. তালিকা তৈরি করাঃ
আপনি যদি মনে করেন আপনার ওজন কমানোর দরকার তবে সেই দিন থেকে কখন কি কি খাবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। এতে আপনি কি পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করছেন তা সম্পর্কে ধারনা থাকবে যা আপনার ওজন কমাতে সহায়ক হবে।
৩. নাচ
যদি আপনি নৃত্যশিল্পী নাও হন, তাহলে গানের সঙ্গে পায়ে তাল মেলান। ১০ মিনিট ধরে তাল মিলিয়ে দেখুন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫৮ শতাংশ ক্যালরি ঝড়াতে পারবেন।
৪. মসলাদার খাবার
শুধু সেদ্ধ খাবার কখনই খাবেন না। মসলা, যেমন—হলুদ, ধনে, জিরে গুঁড়া ইত্যাদি মসলাগুলোকে কখনো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেবেন না। কারণ, এ মসলাই আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
৫. ফোনে ঘুরে কথা বলুন
যখন ফোনে কথা বলবেন, তখন একটা জায়গায় বসে কখনই কথা বলবেন না। সব সময় ঘুরে ঘুরে কথা বলুন। এইভাবে ১০ মিনিটে ৩৬ শতাংশ ক্যালরি নষ্ট করতে পারবেন।
৬. পানি পান করুন
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পানের কারণে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেওয়া সম্ভব হবে।
৭. ঘর মুছুন
বাড়ির কাজ করুন। যেমন, ঘর মুছলে সবচেয়ে থেকে বেশি ক্যালরি নষ্ট করা যায়। এভাবে ৪২ শতাংশ ক্যালরি নষ্ট করা সম্ভব।
৮. চিনিকে না বলুন
চিনি খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিন। এক চা চামচে মোট ১৬ শতাংশ ক্যালরি থাকে। তাই চায়ে বা দুধে কখনোই চিনি দিয়ে খাবেন না।
৯. তাড়াতাড়ি রাতের খাবার শেষ করুন
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাতের খাবার খেয়ে নিন। কারণ, রাতে খাবার খেয়েই শুয়ে পড়লে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর রাতে যদি খিদে পায় তখন এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন।
১০. জগিং করুন
বাইরে দৌড়াতে যাওয়ার কোনো দরকার নেই। পারলে নিজের ঘরের মধ্যেই জগিং করতে পারেন।
১১. দিনে ঘুম বাদ দিন
রাতে আট ঘণ্টা ঘুমানো খুবই দরকার। কিন্তু কখনই দিনের বেলায় ঘুমাবেন না। এতে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
১২. আস্তে আস্তে খান
যখন খাবার খাবেন, তখন জলদি না খেয়ে আস্তে আস্তে খান। এতে আপনার পেট ঠিকঠাকভাবে ভরবে। যদি খুব বেশি তাড়াহুড়ো করে খান, তাহলে প্রয়োজন থেকে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন।
১৩. খাবার আগে পানি খান
খাবার খাওয়ার আগে সব সময় এক গ্লাস পানি খান। এ ছাড়া জাঙ্ক ফুড একেবারেই খাবেন না। যেমন : ক্রিম বিস্কুট, বার্গার ইত্যাদি। যতটা পারবেন বাড়ির তৈরি খাবার খান। এতে শরীর ভালো থাকবে এবং মুটিয়েও যাবেন না।
১৪. ছোট প্লেটে খান
প্লেট বদলে ফেলুন। যে প্লেটে খাবার খান, তার থেকে ছোট প্লেটে খান। এতে মনে হবে বেশি খেয়ে ফেলছেন। তাই কম খাবার খেতে শুরু করবেন।
১৫. খিদে পেলে পপকর্ন খান
শুধু সিনেমা হলে গেলেই পপকর্ন খাবেন না। যখনই খিদে পাবে, তখনই পপকর্ন খেতে পারেন। এটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। তাই মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম।