কিভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে শিখবো – আসুন জেনে নিই

‘ইংরেজি একটি আন্তর্জাতিক ভাষা’ এই  বাক্যটি অত্যন্ত বহুল পরিচিত একটি বাক্য। আমাদের মাঝে ইংরেজি শেখার আগ্রহের কোন কমতি নেই। আমরা নানাভাবে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করি। কখনো ইংরেজি খবরের কাগজ পড়ে, কখনো মুভি  দেখে,  কখনো ইংরেজি খবর শুনে,  কখনো ইংরেজি নাটক দেখে আমরা ইংরেজি শেখার চেষ্টা করি।  এটা কিন্তু আমাদের দোষ নয়। আমরা এভাবে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করি কারন আমরা দেখি নানা মেন্টর আমাদেরকে এরকম সাজেশন দিয়ে থাকে এবং আমরা তা ফলো করে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করি। কিন্তু বিগিনার হিসেবে মুভি দেখে ইংরেজি, খবর শুনে বা কখনো ইংরেজি নাটক দেখে  ইংরেজিতে কথা বলা  শেখাটা অনেক ক্ষেত্রেই জটিল হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের আজকের এই পোস্টে আমরা দেখব কেন এ সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেও আমরা ইংরেজিতে কথা বলতে ব্যর্থ হই এবং পরবর্তীতে ইংরেজি শেখার সহজ কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো যা  বিগিনারদের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হবে। তাই আর দেরি না করে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

প্রথমেই আসুন দেখে নেওয়া যাক আমরা কেন ইংরেজিতে কথা বলতে ব্যর্থ হইঃ

আমরা জানি যে ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে ভবিষ্যতে চাকরির ক্ষেত্র বলি বা ব্যক্তিগত অঙ্গনেও আমরা সুনাম অর্জন করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব। এই কথা মাথায় রেখেই আমরা ছোটবেলা থেকেই ইংরেজি শেখার চেষ্টা করি। কখনো আমরা ইংলিশ খবর দেখি,  কখনো মুভি দেখি,  কখনো ইংরেজি খবর পড়ি।  এসব মাধ্যমে আমরা হয়তো শব্দ বাক্য  শিখে নিতে পারি। কিন্তু যখনই আমরা বন্ধুবান্ধবের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে চাই; দেখা যায় দু-একটা শব্দ বলার পরে যথাযথ শব্দ খুঁজে পাইনা এবং পরবর্তীতে সবার সামনে লজ্জিত হয়ে ইংরেজি শেখার আগ্রহ অনেকাংশে হারিয়ে ফেলি।  পরবর্তীতে আবার অনুপ্রাণিত হয়ে চেষ্টা করি।  ভাবি আচ্ছা ঠিক আছে দু’একদিন পরে আবার শুরু করব।  কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই সময়টা অনেক দীর্ঘ হয়ে যায়। তাই একজন বিগিনার আবারও বিগিনারই থেকে যাই। এবার চলুন ইংরেজি শেখার কিছু সহজ কৌশল নিয়ে আলোচনা করা যাক যা  বিগিনারদের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হবেঃ

You may also Like:

ইংরেজি শেখার কিছু সহজ কৌশলঃ 

১।  নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুকে   ফোকাস করতে হবেঃ

ইংরেজি একটি ভাষা যার মাধ্যমে পৃথিবীর বহু মানুষ তাদের দৈনন্দিন সকল কথাবার্তা আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করে থাকে। এরকম একটি পরিপূর্ণ ভাষায় দক্ষতা অর্জন করা  খুব একটা সহজ নয়।  তাই পুরো ভাষাটিকে একত্রে আয়ত্ত  করার  কথা চিন্তা না করে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে সে অনুযায়ী  অনুশীলন করা যেতে পারে। 

  • প্রথমতঃ আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস করুন যে আপনি কেন ইংরেজি শিখতে চাচ্ছেন এটা হতে পারে যে আপনি কোন চাকরির ইন্টারভিউর জন্য ইংরেজি শিখতে চাচ্ছেন বা আপনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ইউরোপ কান্ট্রি তে যেতে চাচ্ছেন।  যে উদ্দেশ্য ইংরেজি শিখতে চান প্রথমত আপনি আপনার ইংরেজি শেখার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন।
  • দ্বিতীয়তঃ আপনি কি শিখতে চাচ্ছেন।  হয়তো ভাবছেন যে ইংরেজি শিখতে চাচ্ছি।  আমি বোঝাতে চাচ্ছি যে আরো বেশি নির্দিষ্টভাবে আপনি ইংরেজির কি শিখতে চাচ্ছেন? হ্যাঁ আপনার উত্তর হতে পারে আমি  অফিসে ব্যবহার করার মত ইংরেজি শিখতে চাচ্ছি।  কিন্তু অফিসে ব্যবহার করার মতো হাজারো বিষয় রয়েছে।  এই ক্ষেত্রে আপনাকে আরো বেশি স্পেসিফিক বা নির্দিষ্ট টার্গেট সেট করতে হবে।  যেমন আপনি কিভাবে  কাস্টমারদের অভ্যর্থনা জানাবেন বা  আপনি কিভাবে কাস্টমারদের কাছে কিছু বিষয় তথ্য জানতে চাইবেন।
  • তৃতীয়তঃ  আপনি নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন  “আমি কখন আমার নির্ধারিত ইংরেজি টুকু শিখে নিতে চাই?”  এক্ষেত্রে আপনার উত্তর হওয়া উচিত, আমি এখনই এই মুহূর্তে আমার নির্দিষ্ট নির্ধারিত টপিক টুকুন শিখে নিতে চাই বা শেখা শুরু করতে চাই”  আপনি যদি ভাবেন আমি আগামীকাল শুরু করবো বা দুইদিন পরে শুরু করব তাহলে কিন্তু আর কখনোই শুরু করা হবে না। তাই আজই উপযুক্ত সময় আপনার নির্দিষ্ট টপিক  টুকুন শিক্ষা ফেলার। 

২। জাস্ট লিসেন  অর্থাৎ  শুধু শুনুনঃ

আমার মেয়ের বয়স সাড়ে তিন বছর।   একদিন লক্ষ্য করলাম এই বয়সেও ভালোই ইংরেজি বোঝে এবং  দু-চারটি বাক্য ইংরেজিতে বলতে পারে।  কিছু কিছু বাক্য মাধ্যমে ওর মনের ভাব প্রকাশ করছে  তাও আবার ইংরেজিতে।  একদিন রাতে বাইরে হাঁটতে গেলাম।  আমার মেয়ে বলল “পাপা লুক  দ্য মুন ইস বিউটিফুল”  এরকম আরো অসংখ্য বাক্য ও তৈরি করতে শিখিয়েছে। আমার মেয়েকে কিন্তু আমি কোন ব্যাকরন বা ভোকাবুলারি মুখস্ত করি নি। ছোট মানুষ প্রায় সেই ইংরেজি কার্টুন দেখে থাকে  এবং এই কার্টুনের কথাবার্তা শুনে শুনে সে কিন্তু এই বাক্যগুলো তার নিজের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে। 

আসলে কোন একটি ভাষা শিখতে আমরা দুইটি পদ্ধতি ফলো করতে পারি।  একটি শিখন এবং অন্যটি অর্জন।  এক্ষেত্রে  আমি যে উদাহরণটি দিয়েছি আমি অর্জন বলবো।  তাই আমি বিগিনারদের বলবো  ইংরেজি শুনতে হবে।  তবে একসাথে 1 ঘন্টা 2 ঘন্টা তিন ঘন্টা করে ইংরেজি শুনবেন আমি তা বলছি না।  এক্ষেত্রে আমি বলব প্রতিদিন আপনি 10 থেকে 15 মিনিট ইংরেজি শুনুন। একি অডিও বারবার রিপ্লাই করে শুনুন। কমপক্ষে পাঁচ সাত বার রিপ্লে করে শুনুন। 

ইন্টারনেটের বদৌলতে  আমরা যেকোনো বিষয়ে নানা তথ্য খুব সহজেই হাতের  কাছে পেয়ে যাই।  এই ধরুন  গুগল প্লে স্টোরে  বেশকিছু অ্যাপ রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি ইংরেজির বিভিন্ন অডিও কথাবার্তা শুনতে পারেন। 

আপনি এই পডকাস্ট গুলো শুনতে পারেনঃ

আপনি গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে পডকাস্ট প্লেয়ার ডাউনলোড করে নিন। নিচের ছবিতে আমি বেশ কিছু পপুলার পডকাস্ট প্লেয়ারের নাম তুলে ধরেছি আপনি সেখান থেকে যে কোন একটি পডকাস্ট প্লেয়ার ডাউনলোড করে  আপনার পছন্দসই প্রোগ্রাম ডাউনলোড করে অফলাইনে আপনি অডিও গুলো শুনতে পারেন।

 

এছাড়া নিচের ওয়েবসাইট হতেও পডকাস্ট ডাউনলোড করে নিতে পারেন। https://www.npr.org/podcasts/

৩। শব্দের অর্থের দিকে ফোকাস করার দরকার নেই; জাস্ট লিসেনঃ

আপনারা হয়তো শুনেছেন একজন ভালো শ্রোতা একজন ভালো বক্তা।  তাই ইংরেজিতে কথা বলার সবচেয়ে প্রথম এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো শ্রবণ বা শোনা।  একটি শিশু যখন কোন ভাষা শেখে তখন সেই শব্দগুলোর অর্থ কি তা কিন্তু তারা জানে না।  তারা শুধু শুনে আর শুনে।  প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাদের কাছে মনে হতে পারে যে আপনি হয়তো কোন কিছু শিখছেন না।  কিন্তু আপনি যখন একই টপিকের উপর অডিও বারবার বারবার শুনছেন সেই শব্দগুলো আপনার  মস্তিষ্কে অটোমেটিকলি  থেকে যাচ্ছে।  প্রাথমিক ভাবে মনে হতে পারে যে আপনি কিছুই শিখতে পারছেন না কিন্তু স্টেপ একে বর্ণিত নির্দিষ্ট টপিকের উপর ইংরেজি শেখার পাশাপাশি এভাবে আপনার লিসেনিং চালিয়ে যেতে হবে।

৪। কোন অস্বস্তি ছাড়া ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করুনঃ

শ্রবণ করার অনুশীলনের পাশাপাশি অনুশীলন শুরু করতে হবে। আপনারা দেখেছেন একটি শিশু নতুন কিছু শিখলে বারবার বলতে থাকে। এভাবে কথা বলা আয়ত্ত করে। অনুরূপভাবে আপনাকে কথা বলার শুরু করতে হবে। হ্যাঁ আমি ইংরেজিতে কথা বলার কথা বলছি। ভুলভ্রান্তির দিকে খুব একটা নজর না দিয়ে আপনাকে কথা বলা চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি সবাইকে বলে দিতে পারেন যে আমি ইংরাজী শিখছি অর্থাৎ I am learning English. এভাবে আপনি যা কিছু বলতে চাচ্ছেন বা বোঝাতে চাচ্ছেন তা বলতে শুরু করুন। এভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে আপনার ইংরেজি বলার জড়তা এবং ইংরেজি বলা নিয়ে দুশ্চিন্তা বা লজ্জাবোধ অনেকাংশেই দূর হয়ে যাবে।

সবশেষে বিষয়গুলো আবার বলছি, প্রথমতঃ, একজন ব্যক্তি যদি ইংরেজিতে কথা বলতে চায় এবং সে যদি বিগিনার লেভেলের হয় তবে তাকে অবশ্যই টপিকঃ বা নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর উপরে খণ্ড খণ্ডভাবে ইংরেজি বলার অনুশীলন শুরু করতে হবে। দ্বিতীয়তঃ তাকে দৈনিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় ইংরেজি শ্রবণ করতে হবে এবং তৃতীয়তঃ তাকে লোকলজ্জা ভুলে গিয়ে ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করতে হবে। এভাবে, একজন বিগিনার ইংরেজি কথা বলার বিষয় অনেকাংশেই এগিয়ে যেতে পারে। তবে একজন ফ্লুয়েন্ট স্পিকার হওয়ার জন্য অবশ্যই আরো অনেক বিষয় জানা প্রয়োজন। আশা করছি আমাদের পরবর্তী পোষ্ট গুলোতে আমরা এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব।